
নাম বাঙালিদের মতো। দেখতেও খানিকটা ওই ঘরানার হলেও জন্ম কাবুলে। আফগান চলচ্চিত্র মাতিয়ে তুলেছেন একাই। ‘কাবুলি কিড’, ‘লুরি’ বা ‘মুভিং ইন অ্যা সার্কেল’সহ কিছু বিখ্যাত ছবির নায়িকা লিনা আলম।
আফগান দর্শকের মনজুড়ে থাকা ওই মেয়েটির সাফল্য একদিনে আসেনি। যুদ্ধ, ভয়-ভীতি, আতঙ্ক এবং সিনেমা জগতে মেয়েদের জন্য আলাদা ক্যারিয়ার গড়ার চ্যালেঞ্জ নিয়ে লিনার যুদ্ধটি ছিল অন্য দেশের নায়িকাদের চেয়ে পৃথক। কাবুলের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও যুদ্ধের কারণে ১৯৮৯ সালে মা-বাবার সঙ্গে চলে আসেন আমেরিকা-য়।
১৯৯৮ সালে লিনার সৌভাগ্যের দরজা খুলে যায়। ‘ইন ফরেন ল্যান্ড’ ছবিতে তিনি একটি ভারতীয় মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন যে পড়ালেখার জন্য আমেরিকায় আসে। ভারতীয় মেয়েদের সংস্কার, রুচি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরেছিলেন তার সুনিপুণ অভিনয় কৌশলের মাধ্যমে। ওই ছবির পর পরই তিনি পরিচালক সালাম সঙ্গীকে পেয়ে যান মেন্টর হিসেবে। তাকে নতুন করে চলচ্চিত্রটি চেনার সুযোগ করে দেন সালাম। তাকে আত্মবিশ্বাসীও করে তোলেন। তার ‘লুরি’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ দেন। প্রখ্যাত কবি, লেখক ও পেইন্টার হামিদ নাকিব নাকি লিনা আলমের জন্যই ওই ছবির স্ক্রিপ্ট লেখেন। ছবিতে এক আত্মবিস্মৃত ও আবেগীয় আফগান মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করে লিনা দর্শকের মধ্যে বিপুল সাড়া জাগান।
২০০৭ সালে আফগান পরিচালক বার্মাক আকরামের ছবি কাবুলি কিডে অভিনয় করেন লিনা। ছবিতে তার সঙ্গে আরো অভিনয় করেন জনপ্রিয় আফগান শিল্পী হাদজি গুল। ছবিটি আফগান দর্শকের কাছে বিপুল গ্রহণযোগ্যতা পায়। এর পর পর নিজের প্রডাকশন হাউস খোলেন। ওই হাউস থেকেই তার অভিনীত অন্যতম ছবি ‘সাইলেন্ট লাভ’-এ অভিনয় করে আফগান দর্শকের মন জয় করে নেন। এভাবে দর্শকের মনে ক্রমেই স্থায়ী আসন গেড়েছেন। লিনা অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে সিয়ার নুরজাদ-এর ছবি ‘মুভিং ইন অ্যা সার্কেল’, লাল আলজাদার-এর ‘লাইভ ইন গ্রেভ’, গাফোর ফাইজার-এর ‘দি আননোন’, মাসউদ আতিয়াবি-র ‘সয়েল অ্যান্ড কোরাল অন্যতম।
২০১৪ সালে লিনার ছবি ‘আহাল অ্যা দরিয়া’ ও ‘ব্ল্যাক কাইট’ তাকে আবার নতুন করে আলোচনায় আনে।