মংলা-ঘসিয়াখালী চ্যানেল খননের আগেই ভরাট
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর ২০১৫
এজাজ কায়েস, ঘসিয়াখালী থেকে ফিরে

সুন্দরবনের জাহাজডুবির পর সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তড়িঘড়ি করে মংলা-ঘসিয়াখালী চ্যানেল খননের কাজ শুরু হলেও তা আবার ভরাট হতে চলেছে। এ পর্যন্ত ৮০ লাখ ঘনমিটার বা ১ কোটি ৫৬ লাখ টন পলি অপসারণ করা হলেও ড্রেজিং অংশেই আবার নতুন করে ভরাট হয়েছে ৩০ লাখ ঘনমিটার বা ৫৮ লাখ ৫০ হাজার টন পলি (প্রতি ঘনমিটার ১ দশমিক ৯৫ টন হিসেবে)।
এদিকে চলতি বছরের জুনে মংলা ঘসিয়াখালী চ্যানেলটি নৌযান চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার কথা থাকলেও ড্রেজিং কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় এখনো তা সম্ভব হচ্ছে না। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও বিআইডব্লিউটিএ-র একটি সূত্র জানায়, মংলা-ঘসিয়াখালী নৌপথ সংলগ্ন এলাকায় উপকূলীয় বাঁধ ও চিংড়ি ঘের, অপরিকল্পিত স্লুইস গেইট নির্মাণের ফলে কুমারখালী নদীতে জোয়ারের পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে। বিশেষ করে বলেশ্বর ও পশুর নদীর জোয়ারের সঙ্গে আসা পলি বাগেরহাটের রামপাল এলাকার ওই চ্যানেলে এসে জমছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডাবলিউটি)-র প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) আবদুল মতিন জানান, ২২ কিলোমিটার নৌপথ খননকাজ অনেকটা এগিয়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ চ্যানেলের কাজ করা হচ্ছে। এখানে এখন দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ১২টি ড্রেজার কাজ করছে। সরকারি ৮টি, চায়না হারবার কোম্পানির ২টি এবং বাকি দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ড্রেজার। এখন পর্যন্ত ৮০ লাখ ঘনমিটার পলি অপসারণ করা হয়েছে। বাকি কাজও শেষ হবে। তবে ড্রেজিংয়ের জায়গায় নতুন যে পলি জমেছে, তা অপসারণের জন্য মেইন্টেনেন্স ড্রেজিংয়ের প্রয়োজন। অপসারিত পলিমাটি রাখার জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। জাহাজ চলাচলের বিষয়ে তিনি বলেন, জোয়ারের সময় ৮-১২ ফিট ড্রাফট লেভেলের বেশি জাহাজ চলাচল করতে পারে। কিন্তু ভাটার সময় ছোট আকারের জাহাজ (৮ ফিটের বেশি নয়) চলাচল করতে পারে। বিশেষ করে বগুড়া খাল এলাকায় ভাটার সময় ৫-৬ ফিট পানি থাকে। আগামী দুই মাসের মধ্যে এ জায়গার পলি অপসারণ সম্ভব হবে। মংলা-ঘাসিয়াখালী নৌপথটি চালু হলে ৮৭ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ পাড়ি দিয়ে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে নৌচলাচল করতে হবে না। তবে এটি চালু করতে হলে ওই পথে ৩১টিসহ সংযুক্ত খালের মুখ দ্রুত খুলে দিতে হবে। বিশেষ করে মংলা-ঘাষিয়াখালী নৌপথ ড্রেজিংয়ের সঙ্গে সঙ্গে বগুড়া, দাউদখালী, বিষ্ণু খালও ড্রেজিংয়ের প্রয়োজন।
নদী গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিস-এর কর্মকর্তা মমিনুল হক সরকার জানান, মংলা-ঘসিয়াখালী নৌপথ খনন করে নাব্যতা সংরক্ষণ করা কঠিন। এ জন্য সারা বছর ধরে ড্রেজিং কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে।