সবজি চাষে ফুলবাড়ীর কৃষকের সফলতা
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর ২০১৫
মিজানুর রহমান ও নবিউল ইসলাম

কুড়িগ্রামের সীমান্ত ঘেঁষা ধরলা নদী বেষ্টিত ফুলবাড়ী একটি উপজেলা। সম্প্রতি ওই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে রবিশস্য চাষের ধুম। ভিটে লাগোয়া বিস্তীর্ণ জমিতে শোভা পাচ্ছে নানান শাকসবজির সমাহার। চাষ করা সবজির মধ্যে লাউ, বেগুন, আলু, বাঁধাকপি, ফুলকপি, শসা, লালশাক, মুলা, ধনিয়াপাতা, কাঁচামরিচ উল্লেখযোগ্য। এ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে নাওডাঙ্গা ইউনিয়নটি সীমান্তে অবস্থিত। নাওডাঙ্গার মানুষ মূলত রবিশস্যের ওপর নির্ভরশীল। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সবজিচাষ ও বিক্রি করে চলে তাদের জীবন-জীবিকা। বিশেষ করে যাদের জমি নেই তাদের বেঁচে থাকার উৎস এখন সবজি চাষ। তারা অন্যের জমি চুক্তিতে নিয়ে বছরব্যাপী শাকসবজির চাষ করেন। সবজি চাষ করে ইতোমধ্যে অনেক ভূমিহীন স্বাবলম্বী হয়েছেন। উপজেলা কৃষি দফতরের হিসাব মতে, বর্তমানে উপজেলার ৪০৫ হেক্টর জমিতে রবিশস্যের চাষ হচ্ছে।
নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে সরেজমিন দেখা গেছে, সবজি চাষ ওই এলাকায় বদলে দিয়েছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনচিত্র। পূর্ব কুরুষা-ফেরুষা গ্রামের অরুণাকান্ত রায় (৩৮) ইতোমধ্যে সবজি চাষ করে সাফল্য অর্জন করে চমক দেখিয়েছেন। তার সাফল্যের প্রেরণায় এলাকায় অনেকে সবজি চাষে উৎসাহী হয়েছেন। একই গ্রামের হাসেব আলী (৫৫)-এর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিজের জমি নেই বলে চুক্তিতে অন্যের জমি নিয়ে বেগুন আবাদ করেছেন। প্রতি সপ্তাহে ৩-৪ মণ বেগুন বিক্রি করছেন। বর্তমান বাজারে বেগুনের দাম চড়া থাকায় বিক্রি করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। ২৫ বছর থেকে তিনি রবিশস্যের চাষ করছেন।
পূর্ব ফুলমতি গ্রামের কবির হুসেন (৩৩) জানান, তার ক্ষেতের লাউ শাক, মুলাশাক, পাটশাক বিক্রি করছেন। আড়াই বিঘা জমিতে তিনি ফুলকপি চাষ করেছেন। অল্পদিনের মধ্যে ফুলকপি বিক্রি করা যাবে। এক বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করতে খরচ লাগে ৭-৮ হাজার টাকা। বেগুনের জমিতে সহ-ফসল হিসেবে বুনেছিলেন পাটবীজ। ওই পাটশাক বিক্রি করে তার বেগুন চাষের পুরো খরচ উঠে গেছে। এখন বেগুনে তার পুরোটাই লাভ। তিনি জানান, কয়েকদিন আগেও প্রতি মণ বেগুন বিক্রি করেছেন ১ হাজার ১০০ টাকায়। এখন দামটা পড়তি হলেও ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা ঘরে আসবে বলে তার ধারণা।