পাঁপড় যখন জীবিকার সহায়
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর ২০১৫
শেখ হৃদয় আহমেদ, ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় দিলখুশ বা পাঁপড় তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন প্রকাশ সাহা। ওই পাঁপড় তৈরি করে তিনি চালাচ্ছেন অভাবের সংসার। এর পাশাপাশি দুই মেয়ের পড়াশোনার খরচও আসছে ওই আয় থেকে। তিনি উপজেলার ফুলহরি গ্রামের বাসিন্দা। জমি বলতে বসতবাড়ির ৫ শতাংশ জমি ছাড়া কিছুই নেই। বয়স ৪৫ বছরের কাছাকাছি। মা, স্ত্রী ও মেয়েসহ ৫ জনের সংসার। বড় মেয়ে ফুলহরি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ট শ্রেণীএবং ছোট মেয়ে প্রথম শ্রেণীতে পড়ে। তারা পড়ালেখার ফাঁকে বাবার কাজে সাহায্য করে থাকে।
জানা গেছে, পাঁপড় তৈরির কাজ শুরু করার আগে প্রকাশ সাহা গ্রামের বিভিন্নজনের পান বরজে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ওইসব পান বরজ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তিনি জীবিকা নির্বাহের জন্য পাঁপড় তৈরি শুরু করেন।
পাঁপড় সম্পর্কে প্রকাশ সাহা জানান, প্রায় ১০ বছর ওই পাঁপড় তৈরি করে আসছেন তিনি। ময়দা, হলুদ ও লবণসহ বিভিন্ন মশলা দিয়ে তৈরি করা হয় এই পাঁপড়। বছরের ভাদ্র থেকে মাঘ- এই ৬ মাস এর চাহিদা থাকে বেশি। বর্ষা মৌসুমে এটি তৈরি করা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। কারণ পাঁপড় তৈরির পর তা রোদে শুকাতে হয়। তার তৈরি ওই পাঁপড় জেলার বিভিন্ন উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী জেলা মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়ায় বিক্রি করে থাকেন। প্রতি কেজি পাঁপড় তিনি ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি করে থাকেন। তা থেকে তার প্রতিদিন ২০০-২৫০ টাকা উপার্জন হয়। তিনি প্রতিদিন রাত ১টা থেকে কাজ শুরু করে সারা দিনে মাত্র ১০ কেজি পাঁপড় তৈরি করতে পারেন। তা দিয়ে তার ৫ জনের অভাবের সংসার ও ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালানো প্রায় অসম্ভব। তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে যদি তার মায়ের জন্য বিধবা বা বয়স্ক ভাতা এবং একই সঙ্গে ব্যবসার জন্য ঋণের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে হয়তো অভাবের সংসারে সচ্ছলতা ফিরে আসবে।