বাংলাদেশে ব্যবসা করার পরিবেশ আগের চেয়ে দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে। ব্যবসা করার ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ান দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের পরিস্থিতি অপেক্ষাকৃত খারাপ। এসব কারণে বিনিয়োগ পরিস্থিতিও ভালো না। বিদ্যুৎ সংযোগসহ অবকাঠামো নির্মাণের অনুমতি, বৈদেশিক বাণিজ্য, চুক্তি বাস্তবায়ন, অসচ্ছলতা দূরীকরণের সূচকের কোনো উন্নতি হয়নি গত এক বছরে। এসব তথ্য প্রকাশ পেয়েছে বিশ্ব ব্যাংকের ‘ডুইং বিজনেস’ প্রতিবেদনে।
সহজে ব্যবসায় করা যায়- এমন ১৮৯ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১৭৪তম বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিশ্ব ব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে। গত বছর এই অবস্থান ছিল ১৭২তম। এক বছরের ব্যবধানে ব্যবসা করা যায়- এমন পরিবেশের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান দুই ধাপ পিছিয়েছে। সূচকে বাংলাদেশ সবচেয়ে খারাপ করেছে বিদ্যুৎ প্রাপ্তির সূচকে। এক্ষেত্রে ১৮৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮৯তম। অবশ্য সরকারের পক্ষ থেকে জোর গলায় বলা হচ্ছে, বিদ্যুতের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিপুল উন্নতি হয়েছে।
বাংলাদেশের অবস্থান যে পাঁচটি সূচকে সবচেয়ে বেশি অবনতি হয়েছে সেগুলোর মধ্যে শীর্ষে আছে ব্যবসা শুরুর ক্ষেত্রে। এ সূচকে গত বছর বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১১১তম। এবার তা ছয় ধাপ কমে ১১৭তম হয়েছে। ঋণের প্রাপ্তি সূচকে ১২৮ থেকে পাঁচ ধাপ কমে ১৩৩তম হয়েছে। সম্পত্তি নিবন্ধন, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী সুরক্ষা, কর পরিশোধ সূচকে গতবারের চেয়ে এক ধাপ করে অবদমন হয়েছে বাংলাদেশের। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। অষ্টম স্থানে রয়েছে আফগানিস্তান। তালিকায় দেশটির অবস্থান ১৭৭তম। দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষ স্থানে আছে ভুটানÑ অবস্থান ৭১তম। ব্যবসার জন্য শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে সবচেয়ে সামনে রয়েছে সিঙ্গাপুর। বাকি ৯টি হলো নিউজিল্যান্ড, ডেনমার্ক, দক্ষিণ কোরিয়া, হংকং, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সুইডেন, নরওয়ে ও ফিনল্যান্ড।
২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত হালনাগাদ তথ্য নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের পক্ষ থেকে সংস্থাটির সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফিনান্স করপোরেশন (আইএফসি)-র পক্ষ থেকে ওই সূচকটি তৈরি করা হয়েছে। একটি দেশের অর্থ-বাণিজ্যের পরিবেশ ১০টি মাপকাঠিতে তুলনা করে ওই সূচক তৈরি করা হয়। বাংলাদেশের পরিস্থিতি অনুধাবন করতে প্রতিবেদনে ব্যবহার করা হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামের তথ্য। চলতি বছরের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ১০ সূচকে বাংলাদেশের পয়েন্ট  ৪৩ দশমিক ১০।  গতবার তা ছিল ৪২ দশমিক ৭১।