নেপালে ভারতীয় অবরোধ বাংলাদেশও ক্ষতিগ্রস্ত
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর ২০১৫
কাজী মারুফ

ভারতের ‘অঘোষিত অবরোধ’-এর ফলে নেপালে মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হচ্ছে। বাণিজ্যিক পণ্য অবরোধের সঙ্গে সঙ্গে হিমালয়ের ওই দেশটিতে জীবন রক্ষাকারী সব পণ্য, পরিবহন ও সেবা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নেপালের পরিবহন ব্যবসায়ী দিনেশ ভা-ারি বলেন, জ্বালানির অভাবে প্রায় ৮০ শতাংশ যানবাহন এখন রাস্তা থেকে উঠে গেছে। পরিবহন সেক্টরের ৯ লাখ শ্রমিক বেকার। ওষুধের অভাবে হাসপাতালগুলোয় করুণ অবস্থা। গত বছরের তুলনায় এ বছর নেপালে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা ৮ লাখ থেকে কমে প্রায় অর্ধেক হয়ে গেছে।
এদিকে ভারতীয় অবরোধের কারণে প্রায় ছয় সপ্তাহ বন্ধ বাংলাদেশ-নেপাল দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য। অবরোধের কারণে বাংলাবান্ধায় ভারতীয় সীমান্তের কাছে ভারতীয় শুল্ক বিভাগের কাছ থেকে বাধা আসার শঙ্কায় আটকে আছে নেপালে রফতানিযোগ্য পণ্যবাহী ট্রাকগুলো। বাংলাবান্ধায় আটকে থাকা নেপালগামী ট্রাকগুলোয় রয়েছে ফেব্রিকস, জুস, জ্যাম, ব্যাটারি, তুলা ইত্যাদি পণ্য। আছে জীবন রক্ষাকারী ওষুধও।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে নেপাল ও বাংলাদেশের মাঝে মধ্যে প্রায় ৩৬৫ কোটি টাকার বাণিজ্য হয়। এর মধ্যে রফতানির পরিমাণ ছিল ২৫০ কোটি এবং আমদানি ছিল ১১৫ কোটি টাকা। দৈনিক প্রায় ৫০টি ট্রাক নেপাল ও বাংলাদেশে পণ্য পরিবহন করতো। বিশেষ করে বাংলাদেশের ওয়ালটন ও প্রাণ গ্রুপের বিভিন্ন পণ্য নেপালে বেশ ভালো ব্যবসা করছিল। ‘নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে’ এখন পণ্যবাহী সব গাড়ি থামিয়ে রেখেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা। নেপাল ট্রানজিট অ্যান্ড ওয়্যারহাউস কোম্পানির যাদবরাজ সিবাকোটি বলেন, নেপাল-ভারত ট্রানজিট চুক্তি অনুযায়ী ভারতের উচিত এসব গাড়ি অবাধে সীমান্ত পার হতে দেয়া। নেপালের মেছি শুল্ক দফতরের প্রধান ভিম প্রসাদ অধিকারী জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বন্ধ যাওয়ায় নেপালের দৈনিক গড় রাজস্ব আয় কমেছে ১১ লাখ রুপি। শুল্ক বিভাগের সূত্র ধরে কাঠমান্ডু পোস্ট জানায়, নেপালি মসুর ডালের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক দেশ হলো বাংলাদেশ। অবরোধের ফলে নেপালের ক্ষতির পরিমাণ ইতোমধ্যে প্রায় ৪০০ বিলিয়ন নেপালি রুপি ছাড়িয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, ভারতীয় কারণে নেপালে বাংলাদেশি পণ্যের প্রবেশ বাধাগ্রস্ত হলেও বাংলাদেশে ভারত সম্প্রতি তার করিডর সুবিধা আরো অবাধ করে নিতে সক্ষম হয়েছে।